সবাইকে আজকের টিপস পর্বে স্বাগতম।
গত দুইটি পর্বে আমি আপনাদের জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সম্পর্কিত কিছু টিপস ও ট্রিকস সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি। যারা পোষ্টগুলো দেখেননি বা আর একবার দেখে নিতে চান তারা নিচের লিঙ্ক থেকে দেখে নিতে পারেন -
সবার জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কয়েকটি টিপস! (প্রথম পর্ব)
সবার জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কয়েকটি টিপস! (দ্বিতীয় পর্ব)
আজকের পর্বে আপনাদের জন্য নতুন কিছু টিপস ও ট্রিকস নিয়ে এসেছি। চলুন দেখে নেই।
1. উবুন্টু আইএসও ইমেজ সিডিতে নিন :
উবুন্টু ওয়েবসাইট থেকে বিনা মূল্যে উবুন্টু সংগ্রহ করা যায়। মূল সাইট থেকে ডাউনলোড অপশন পাওয়া যাবে। তবে সরাসরি ডাউনলোড করা থেকে টরেন্ট ব্যবহার করে ডাউনলোড করা হলে সহজেই খুব দ্রুত ডাউনলোড হয়ে যায়।
উবুন্টু সিডি ইমেজ ফাইল হিসেবে ডাউনলোড করতে হয়। এই ইমেজ ফাইলগুলো ISO ফরম্যাটে থাকে। অন্যান্য ডাটা ফাইলের মতো ISO ইমেজ সরাসরি কপি পেস্ট করে সিডিতে বার্ন করা যায় না। নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে ISO ফাইলটি সিডিতে এক্সট্রাক্ট করতে হয়। অন্য কোনো পদ্ধতিতে সিডি বার্ন করা হলে সেই সিডি থেকে উবুন্টু ইনস্টল করা যাবে না। সিডি থেকে উবুন্টু ইনস্টল করতে হলে ডাউনলোড করা ISO ফাইলটি সঠিক পদ্ধতিতে সিডিতে বার্ন করতে হবে। প্রয়োজনে বার্ন করার আগে আইএসও ফাইলটি পরীক্ষা করে দেখে নিতে পারেন। সিডি বার্ন করার জন্য লাগবে একটি সচল সিডি/ডিভিডি বার্নার এবং একটি ৭০০ মেগাবাইট ধারণক্ষমতার সিডি। বহনযোগ্য তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমগুলোর মধ্যে সিডি সব থেকে সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী। এ ছাড়া এই ISO ফাইলটি ডিভিডিতে বার্ন করা যাবে, তবে ডিভিডিতে অনেক দ্রুতগতিতে বার্ন করা হয় যা প্রায় সময়ই ঠিকমতো কাজ করে না।
উইন্ডোজের জন্য এই সাইট থেকে Infra Recorder নামের ফ্রি এবং মুক্ত সিডি বার্ন করার সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে হবে। এবার একটি খালি সিডি আপনার সিডি বা ডিভিডি বার্নারে প্রবেশ করান এবং Do nothing অথবা Cancel নির্বাচন করুন যদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো উইন্ডো ওপেন হয়। এবার Infra Recorder সফটওয়্যারটি চালু করুন এবং মূল উইন্ডো থেকে Write Image বাটনটি চাপুন। বিকল্পভাবে এই কাজটি করা যাবে Actions মেনু থেকে Burn image নির্বাচন করে । যে ফাইল ব্রাউজারটি ওপেন হবে, সেখান থেকে আপনার ডাউনলোড কর উবুন্টু সিডি ইমেজটি নির্বাচন করুন এবং Open বাটনটি চাপুন। এরপর OK চাপুন।
2. কেমন আছে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক :
কম্পিউটার যখনই চালু হচ্ছে, ব্যবহূত হচ্ছে এর হার্ডডিস্ক। কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য থেকে শুরু করে সবকিছু, এমনকি অপারেটিং সিস্টেমটিও সংরক্ষিত থাকে হার্ডডিস্কে। তাহলে হার্ডডিস্কের গুরুত্ব কত বেশি, সেটা বোঝাই যাচ্ছে। সেই হার্ডডিস্কে যদি ব্যাড সেক্টর পড়ে বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে হারাতে পারেন কম্পিউটারে সংরক্ষিত সব তথ্য। এ জন্য হার্ডডিস্কের কী অবস্থা, সেটা জানা থাকা খুব জরুরি। এ জন্যই রয়েছে ‘হার্ডডিস্ক মনিটর’ নামক সফটওয়্যার। মাত্র ১১.৯ মেগাবাইটের এই সফটওয়্যারটি বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যাবে এই ঠিকানা থেকে। একই সঙ্গে ১.৩ মেগাবাইটের একটি ইউজার গাইডও নামিয়ে নিতে পারেন একই ঠিকানা থেকে। সফটওয়্যারটি ইনস্টলেশনের জন্য ১৫ মেগাবাইট জায়গা নেবে হার্ডডিস্কে। সফটওয়্যারটি ইনস্টল করে চালু করার পর একটি নতুন উইন্ডো খুলবে। এখান থেকে ‘বেসিক ইনফো’ ও ‘স্মার্ট ইনফো’ তে গেলে হার্ডডিস্কের যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন নিমিষেই। হার্ডডিস্কের সিরিয়াল নম্বর, মডেল নম্বর, নির্মাতা কোম্পানির নাম, ধারণক্ষমতা, সিলিন্ডার—সবকিছু জানা যাবে। হার্ডডিস্কে কোনো ব্যাড সেক্টর আছে কি না, হার্ডডিস্কের তাপমাত্রাই বা কত, তা-ও জানা যাবে। টেম্পারেচার গ্রাফের মাধ্যমে কোন সময় তাপমাত্রা কত ছিল সেটাও জানা যাবে। সেটাও গ্রাফচিত্রের মাধ্যমে হওয়ায় বুঝতে সুবিধা হবে অনেক বেশি। হার্ডডিস্ক মনিটর সফটওয়্যারটি উইন্ডোজ চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজে থেকেই চালু হতে পারে। অবশ্য আপনি চাইলে উইন্ডোজ স্টার্টআপে চালু হওয়া বন্ধ করে দিতে পারেন খুব সহজেই।
3. পেনড্রাইভ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন :
কম্পিউটারে ভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী পেনড্রাইভ। ডাটা স্থানান্তরের জন্য যখন কম্পিউটারে পেনড্রাইভ লাগানো হয় তখন অনেক সময় পেনড্রাইভ অটো ওপেন হয়ে যায় এবং পেনড্রাইভে ভাইরাস থাকলে তা কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে। পেনড্রাইভের অটোরান বন্ধ করে দিলে এবং পেনড্রাইভ না খুলে টাস্কবারের নেভিগেটর থেকে বা ফোল্ডার অপশনের মাধ্যমে পেনড্রাইভ ব্যবহার করলে, কম্পিউটারে ভাইরাস তুলনামূলকভাবে কম ছড়াবে।
পেনড্রাইভের অটোরান বন্ধ করার জন্য প্রথমে Start মেনু থেকে Run-এ ক্লিক করে gpedit.msc লিখে ok-তে ক্লিক করুন। যে উইন্ডোটি আসবে সেটিতে User configuration-এর বাম পাশের (+) এ ক্লিক করে Administrative Templates-এর বাম পাশের (+) এ ক্লিক করুন। তারপর System-এ ক্লিক করলে দেখবেন ডান পাশের উইন্ডোতে Turn off Autoplay নামে একটি লেখা এসেছে। সেটিতে ডবল ক্লিক করে Enable নির্বাচন করে Turn off Autoplay on অংশে All drives নির্বাচন করে ok করে বেরিয়ে আসুন।
4. ভাইরাসে লুকানো পেনড্রাইভের ফাইল উদ্ধার :
অনেক সময় দেখা যায়, পেনড্রাইভে ভাইরাসের আক্রমণের ফলে পেনড্রাইভের ফাইল আর দেখা যায় না। কিন্তু ফাইলগুলো পেনড্রাইভের জায়গা দখল করে রাখে। সেই লুকানো ফাইলগুলো দেখার জন্য প্রথমে My computer-এ মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Properties-এ যান। এখন System Restore-এ ক্লিক করে Turn off System Restore on all drives-এ টিক চিহ্ন দিয়ে ok ক্লিক করুন। নতুন একটি উইন্ডো এলে সেটির yes-এ ক্লিক করুন। এখন My Computer-এর মেনুবারের Tools থেকে Folder options নির্বাচন করে View-তে ক্লিক করুন। এখন Show hidden files and folders-এ টিক চিহ্ন দিন এবং Hide extensions. ও Hide protected.. বক্স থেকে টিক চিহ্ন তুলে দিয়ে ok করুন। এখন দেখবেন পেনড্রাইভে আপনার ফাইল, ফোল্ডারগুলো লুকায়িত (হিডেন) অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।
পেনড্রাইভে করে কোনো ফাইল বা ফোল্ডার অন্য কোনো কম্পিউটারে নিতে চাইলে সেগুলো জিপ করে নেবেন। জিপ করা ফাইল বা ফোল্ডারে ভাইরাস আক্রমণ করে না। কোনো ফাইল বা ফোল্ডার জিপ করতে চাইলে সেটিতে মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Send to Compressed (Zipped)-এ ক্লিক করুন। দেখবেন জিপ হয়ে গেছে। আবার আনজিপ করতে চাইলে সেটিতে মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Extract All-এ ক্লিক করে পরপর দুইবার Next-এ ক্লিক করে দেখবেন আনজিপ হয়ে গেছে।
5. আপনার ই-মেইলের পাসওয়ার্ড কেউ জানে কিনা জেনে নিন :
আপনার মেইলের পাসওয়ার্ড কেউ হয়তো জেনে গেছে এবং সে মাঝেমধ্যে আপনার মেইল ঠিকানায় প্রবেশ করে। অথবা আপনার মেইল ঠিকানাটি হ্যাকিং হয়ে গিয়েছিল, কোনোভাবে হয়তো পুনরায় উদ্ধার করতে পেরেছেন। এখন কীভাবে জানবেন কে আপনার মেইল ঠিকানায় প্রবেশ করেছিল অর্থাৎ কোন আইপি ঠিকানা থেকে আপনার মেইল ঠিকানায় প্রবেশ করা হয়েছিল?
- জিমেইলের ক্ষেত্রে : প্রথমে জিমেইল ঠিকানায় লগইন করে সবার নিচে Last account activity এর ডান পাশে Details-এ ক্লিক করুন। নতুন একটি পেইজ আসবে। সেখানে আপনার কম্পিউটারের বর্তমান আইপি ঠিকানা এবং গত ১০ বার কখন, কত তারিখ, কোন আইপি ঠিকানা (দেশের নামসহ) থেকে আপনার জিমেইলে প্রবেশ করা হয়েছে, সবগুলোর তালিকা আসবে। আপনি যদি সব সময় একই কম্পিউটার থেকে লগইন করে থাকেন এবং একই কোম্পানির ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে আইপি ঠিকানার চারটি অংশের মধ্যে প্রথম দুটি অংশের ঠিকানা একই থাকবে। তখন যদি দেখেন ভিন্ন কোনো আইপি থেকে বা ভিন্ন কোনো সময়ে আপনার মেইলে প্রবেশ করা হয়েছিল এবং ওই আইপি ঠিকানা সম্পর্কে যদি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আইপি ঠিকানাটি কপি করে এই ঠিকানায় গিয়ে টেক্সটবক্সে পেস্ট করে IP Whois বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে জানতে পারবেন ওই আইপি ঠিকানাটি কোন সার্ভিস প্রোভাইডারের, তাদের ঠিকানা, মেইল ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি। এমনকি একটি মানচিত্রের সাহায্যেও দেখানো হবে কোন জায়গা থেকে ওই আইপি ঠিকানার সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে।
- ইয়াহুর ক্ষেত্রে : প্রথমে ইয়াহু মেইলে লগইন করে আপনার নামের ওপর ক্লিক করে Account Information নির্বাচন করুন। পাসওয়ার্ড দিতে বললে পুনরায় পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। এখন নতুন পেইজ এলে বাঁ পাশ থেকে Sign-In and Security এর সবার নিচের View your recent login activity-তে ক্লিক করুন। নতুন পেইজ এলে দেখতে পাবেন আপনার কম্পিউটারের বর্তমান আইপি ঠিকানা এবং গত ১০ বার কোন দেশ থেকে, কত তারিখ, কতটার সময়, ব্রাউজার না ইয়াহু মেসেঞ্জার দিয়ে আপনার মেইলে প্রবেশ করা হয়েছে এবং তখন কী কী কাজ করা হয়েছে। ডান পাশে Location থেকে IP Address নির্বাচন করে দিলে দেখতে পাবেন কোন কোন আইপি ঠিকানা থেকে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা হয়েছে। এবং নিচে View More-এ ক্লিক করলে গত ২০ বার কোন কোন আইপি ঠিকানা থেকে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা হয়েছে, তা-ও দেখতে পাবেন। আপনি যদি সব সময় একই কম্পিউটার থেকে লগইন করে থাকেন এবং একই কোম্পানির ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে আইপি ঠিকানার চারটি অংশের মধ্যে প্রথম দুটি অংশের ঠিকানা একই থাকবে। তখন যদি দেখেন ভিন্ন কোনো আইপি থেকে বা ভিন্ন কোনো সময়ে আপনার মেইলে প্রবেশ করা হয়েছিল এবং ওই আইপি ঠিকানা সম্পর্কে যদি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আইপি ঠিকানাটি কপি করে এই ঠিকানায় গিয়ে টেক্সটবক্সে পেস্ট করে IP Whois বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে জানতে পারবেন ওই আইপি ঠিকানাটি কোন সার্ভিস প্রোভাইডারের, তাদের ঠিকানা, মেইল ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি। এমনকি একটি মানচিত্রের সাহায্যেও দেখানো হবে কোন জায়গা থেকে ওই আইপি ঠিকানার সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। ইয়াহু মেইলের বিভিন্ন ভার্সন আছে যেমন ক্ল্যাসিক, বিটা ইত্যাদি। তাই বিভিন্ন ভার্সনে এই অপশনগুলো বিভিন্ন জায়গায় থাকতে পারে।
6. ব্যবহার করুন উইন্ডোজ ৭-এর লুকানো থিম :
উইন্ডোজ ৭-এর ব্যবহারকারী মাত্রই জানেন যে উইন্ডোজ ৭-এ কিছু ডিফল্ট থিম আগে থেকেই দেওয়া থাকে। এসব থিমের ভেতরেই উইন্ডোজ ৭-এর নিজস্ব ওয়ালপেপার, সাউন্ড, আইকন, টাস্কবার ইত্যাদি সাজানো থাকে। এ নির্দিষ্ট সংখ্যক থিমের বাইরে অন্য কোনো থিম ব্যবহার করতে চাইলে সেটা ডাউনলোড করে নিতে হয় ইন্টারনেট থেকে। কিন্তু আপনি কি জানেন আপনার অজান্তেই আপনার পিসিতেই আরও পাঁচ পাঁচটি থিম লুকিয়ে রেখেছে উইন্ডোজ! :O
হ্যাঁ, একেবারে সত্যি কথা! এখন শুধু একটু কষ্ট করে মিনিট পাঁচেক সময় দিন নিজের উইন্ডোজ ৭ পিসিতে। প্রথমে স্টার্ট থেকে সার্চ বারে গিয়ে :\Windows\Globalization\MCT লিখুন। এবার এন্টার চাপুন। তাহলে নতুন একটি উইন্ডো খুলবে। নতুন উইন্ডোতে পাঁচটি ফোল্ডার দেখতে পাবেন। এবারে প্রথম ফোল্ডারটি মানে MCT-AU ফোল্ডারে ঢুকে Theme –এ ঢুকে AU.theme-এ ক্লিক করুন। তাহলে উইন্ডোজ ৭-এর অস্ট্রেলিয়া থিম ইন্সটল হবে। একইভাবে এক এক করে MCT-CA, MCT-GB, MCT-US, MCT-ZA ফোল্ডারগুলোতে ঢুকে Theme ফোল্ডারে ঢুকে যথাক্রমে CA.theme, GB.theme, US.theme ও ZA.theme ফাইলগুলোতে ক্লিক করুন তাহলে বাকি চারটি থিমও ইন্সটল হয়ে যাবে আপনার পিসিতে। এই থিম চারটি হলো থিম কানাডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে।
7. নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করুন :
যাঁরা সাইবার ক্যাফে অথবা অফিসে অর্থাৎ নিজের ব্যক্তিগত কম্পিউটারের বাইরেও অন্য কোনো কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাঁরা নিশ্চয় একটা দুশ্চিন্তায় থাকেন সব সময়। আর সেটা হলো নিজের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা। অনেক সময় দেখা যায়, আপনি হয়তো সাইবার ক্যাফেতে বসে ফেসবুক ব্যবহার করছেন অমনি বিদ্যুৎ চলে গেল, এদিকে আপনি ফেসবুক থেকে লগ আউট করেননি অথবা জরুরি ও গোপনীয় কোনো ই-মেইল পাঠাচ্ছিলেন অমনি লগ আউট করার আগেই বিদ্যুৎবিভ্রাট বা এমনও হতে পারে, বিদ্যুতের সমস্যা না, সমস্যা হলো আপনি কোন কোন ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন সেটা ব্রাউজার হিস্টোরি থেকে কেউ দেখে নিক তা চাইছেন না। তাহলে কী করতে পারেন? ভাবছেন ইশ, ব্রাউজিংয়ে যদি আরেকটু প্রাইভেসি থাকত। হ্যাঁ, আপনি চাইলেই যেকোনো কম্পিউটারে, যেকোনো ওয়েব ব্রাউজারে প্রাইভেট ব্রাউজিং করতে পারেন খুব সহজেই। মোজিলা ফায়ারফক্সের ক্ষেত্রে এ জন্য ব্রাউজার খুলে Ctrl+Shift+P একসঙ্গে চেপে ধরতে হবে। তাহলে নতুন উইন্ডো আসবে। সেখান থেকে Start Private Browsing সিলেক্ট করে দিলেই হবে। তবে মনে রাখবেন, প্রাইভেট ব্রাউজিং সিলেক্ট করে দেওয়া মাত্র ফায়ারফক্সের আগের উইন্ডো বন্ধ হয়ে নতুন উইন্ডো খুলে যাবে।
গুগল ক্রোমের ক্ষেত্রে একসঙ্গে Ctrl+Shift+N চাপতে হবে অথবা wrench বাটনে চাপতে হবে। এবার New Incognito Window সিলেক্ট করে দিতে হবে। তাহলে প্রাইভেট ব্রাউজিংয়ের জন্য নতুন উইন্ডো খুলবে। আর মাইক্রোসফট ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের জন্য একসঙ্গে Ctrl+Shift+P চেপে ধরুন। এবার সিলেক্ট করে দিন। তাহলেই নতুন উইন্ডো খুলবে প্রাইভেট ব্রাউজিংয়ের জন্য।
8. পিসি অকারণে রিস্টার্ট হওয়া বন্ধ করুন :
নানা কারণে পিসি পুনরায় চালু (রিস্টার্ট) হতে পারে। এর মধ্যে যেসব কারণ রয়েছে, সেগুলো ঠিক করার মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
- অপারেটিং সিস্টেমের জটিলতা: অনেক সময় অপারেটিং সিস্টেমে জটিলতা দেখা দিলে বা অপারেটিং সিস্টেম ক্র্যাশ করলে পিসি রিস্টার্ট হয়। উইন্ডোজের ডিফল্ট সিস্টেমে অপারেটিং সিস্টেমে কোনো সমস্যা হলে পিসি রিস্টার্ট নেয়। ডিফল্ট সিস্টেম বন্ধ করতে মাই কম্পিউটারে ডান ক্লিক করে propertise থেকে Advanced tab/Startup and Recovery/Settings অপশনে যান। এখন System Failure অপশনের অন্তর্গত Automatically Restart অপশন থেকে টিক চিহ্ন উঠিয়ে Ok করুন।
- ভাইরাসের আক্রমণ: বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের কারণেও পিসি রিস্টার্ট নিতে পারে। এ জন্য পিসিতে সব সময় হালনাগাদ (আপডেট) অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। নিয়মিত রুটিন করে পিসি স্ক্যান করুন।
- হার্ডওয়্যারের সমস্যা: নতুন কোনো হার্ডওয়্যার সংযুক্ত করলে এবং সেটি পিসির সঙ্গে অসামঞ্জস্য হলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। পুরোনো হার্ডওয়্যারের সংযোগে ত্রুটি দেখা দিলে পিসি অহেতুক রিস্টার্ট নিতে পারে। এ জন্য হার্ডওয়্যারের সংযোগস্থল চেক করে দেখুন, ঠিক আছে কি না।
- নতুন প্রোগ্রাম ইনস্টলের কারণে: অনেক সময় কিছু সফটওয়্যার, গেমস ইনস্টল করার কারণে পিসি রিস্টার্ট নেয়। আপনার পিসির কনফিগারেশনের সঙ্গে যদি কাঙ্ক্ষিত সফটওয়্যার, গেমস সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তাহলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বুঝেশুনে প্রোগ্রাম ইনস্টল করুন।
- হার্ডডিস্কের ত্রুটি: হার্ডডিস্কে ত্রুটিপূর্ণ সমস্যা দেখা দিলে পিসি রিস্টার্ট নিতে পারে। ত্রুটির কারণে হার্ডডিস্ক ডেটা রিড করতে পারে না। এর ফলে পিসি হ্যাং অথবা রিস্টার্ট হতে পারে। এ জন্য হার্ডডিস্ক স্ক্যান করে ত্রুটিপূর্ণ স্থান (ব্যাড সেক্টর) চিহ্নিত করতে পারেন।
এই ছিল আপনাদের জন্য আজকের পর্বের টিপস ও ট্রিকস। কেমন লাগলো জানাবেন। আগামী পর্বে আপনাদের জন্য নতুন কিছু টিপস নিয়ে আসবো ইনশাল্লাহ!
সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আর অবশ্যই প্রযুক্তির সাথে থাকুন!
সবাইকে ধন্যবাদ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thanks for comment me