সবাই আশা করি ভালই আছেন! গত পর্বে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কয়েকটি টিপস দিয়েছিলাম। আজকে এর দ্বিতীয় পর্বে আপনাদের জন্য আরো কিছু ট্রিকস ও টিপস থাকবে। যারা আগের পোষ্টটি দেখেন নি তারা এখান থেকে দেখে নিন :
সবার জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কয়েকটি টিপস! (প্রথম পর্ব)
চলুন দেখে নেয়া যাক আজ কি কি টিপস ও ট্রিকস থাকছে আপনাদের জন্য !
1. পুরো ওয়েবসাইট সংরক্ষণ করে রাখুন :
ইন্টারনেটে ওয়েবসাইট দেখার করার সময় কোনো পেজ যদি পরে দেখার দরকার হয় তাহলে ব্রাউজার থেকে খুব সহজেই সে পেজটি সংরক্ষণ করে রাখা যায় কম্পিউটারে। আবার অনেকে প্রয়োজনীয় অংশের স্ক্রিন শট নিয়ে রাখেন। পুরো ওয়েবসাইটটিই প্রয়োজন হলে সংরক্ষণ করে রাখা যাবে কম্পিউটারে। এবং সেভ করা ওয়েবসাইট পরে অফ লাইনে দেখতে পারবেন সহজেই। এ জন্য আপনাকে একটা ছোট্ট সফটওয়্যার ইনস্টল করে নিতে হবে কম্পিউটারে। এর নাম HT Track.
এর আকার মাত্র ৩.৪ মেগাবাইট। এটি একেবারে বিনা মূল্যে নামিয়ে নেওয়া যাবে এই ঠিকানা থেকে। সফটওয়্যারটি ইনস্টল করার পর ইন্টারনেট ব্রাউজার না চালু করে সরাসরি সফটওয়্যার চালু করে ইন্টারফেস থেকে নিচের দিকে নেক্সট লেখা ট্যাবে ক্লিক করুন। তাহলে নতুন একটি উইন্ডো খুলবে। নতুন খোলা উইন্ডোতে প্রজেক্ট নেম ও প্রজেক্ট ক্যাটাগরি লেখা ঘরে ইচ্ছামতো নাম লিখে নেক্সটে ক্লিক করুন। এবার আরেকটি নতুন উইন্ডো খুললে Add URL-এ ক্লিক করলে Insert URL লেখা বক্স আসবে। সেখানে আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটের ঠিকানা লিখে ওকে করুন। সেভ অপশন এলে পছন্দের ফোল্ডার নির্বাচন করে দিন। তাহলেই আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইট পুরোটাই নামানো হয়ে যাবে কম্পিউটারে। ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই যখন-তখন দেখতে পারবেন সংরক্ষণ করা ওয়েবসাইটটি ইন্টারনেট ব্রাউজারের সাহায্যে।
2. আপনার কম্পিউটার থেকে মুছে ফেলুন অপ্রয়োজনীয় ফাইল :
কম্পিউটারে জমে থাকা Prefetch ফাইল কম্পিউটারকে স্লো করে দেয়। আমরা সাধারণত Start/Run-এ গিয়ে prefetch লিখে এই ফাইলগুলো ডিলিট করি। কিন্তু আপনি ইচ্ছা করলে এই ফাইলগুলো অটোমেটিক ডিলিট করতে পারেন। এ জন্য প্রথমে My computer-এ যান, এবার আপনার হার্ডড্রাইভে যান। এখানে কোনো ফাঁকা জায়গায় Right click করে New অপশন থেকে Text document-এ যান এবং এটি deleteprefetch নামে সেভ করুন। এবার Double click দিয়ে এই ফাইলে প্রবেশ করুন এবং লিখুন del C:\Windows\Prefetch\*.* /Q .এখন File/Save as থেকে All files নির্বাচিত করুন Save as type হিসেবে। সবশেষে deleteprefetch.bat নামে এটি সেভ করুন। লক্ষ করে দেখুন, একটি Batch file তৈরি হয়েছে। এবার থেকে এই Batch file-এ Double click দিলেই Prefetch ফাইলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলিট হয়ে যাবে।
3. কম্পিউটার দ্রুত গতির করার কিছু টিপস :
উইন্ডোজ সেটআপ দেয়ার পর দেখা যায় কম্পিউটার ঘোড়ার মত ছুটছে, তারপর আবার সেই কাছিমের দৌড়! আর কাহাঁতক ভাল লাগে? ছোট কয়েকটি নিয়ম মেনেই আপনার কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি করতে পারেন-
কিছু সময় পরপর Start থেকে Run-এ ক্লিক করে tree লিখে ok করুন। এতে র্যামের কার্যক্ষমতা বাড়ে।
Ctrl + Alt + Delete চেপে বা টাস্কবারে মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Task Manager খুলুন। তারপর Processes-এ ক্লিক করুন। অনেকগুলো প্রোগ্রাম-এর তালিকা দেখতে পাবেন। এর মধ্যে বর্তমানে যে প্রোগ্রামগুলো কাজে লাগছে না সেগুলো নির্বাচন করে End Process-এ ক্লিক করে বন্ধ করে দেন। যদি ভুল করে কোনো প্রোগ্রাম বন্ধ করে দেন এবং এতে যদি অপারেটিং সিস্টেম এর কোন সমস্যা হয় তাহলে কম্পিউটার রিস্টার্ট করুন।
কম্পিউটারের র্যাম কম থাকলে কম্পিউটার ধীর গতির হয়ে যায়। ভার্চুয়াল মেমোরি বাড়িয়ে কম্পিউটার গতি কিছুটা বাড়ানো যায়। ভার্চুয়াল মেমোরি বাড়ানোর জন্য প্রথমে My computer-এ মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে properties-এ যান। এখন Advance-এ ক্লিক করে performance এর settings-এ ক্লিক করুন। আবার Advance-এ ক্লিক করুন। এখন change-এ ক্লিক করে নতুন উইন্ডো এলে সেটির Initial size ও Maximum size-এ আপনার ইচ্ছামত size লিখে set-এ ক্লিক করে ok দিয়ে বেরিয়ে আসুন। তবে Initial size-এ আপনার কম্পিউটারের র্যামের size-এর দ্বিগুন এবং Maximum size-এ র্যামের size-এর চারগুন দিলে ভাল হয়।
কন্ট্রোল প্যানেলে যান। Add or Remove-এ দুই ক্লিক করুন। Add/Remove windows components-এ ক্লিক করুন। নতুন যে উইন্ডো আসবে সেটির বাম পাশ থেকে অদরকারি প্রোগ্রামগুলোর পাশের টিক চিহ্ন তুলে দিন। তারপর Accessories and Utilities নির্বাচন করে Details-এ ক্লিক করুন। নতুন যে উইন্ডো আসবে সেটি থেকে যে প্রোগ্রামগুলো আপনার কাজে লাগে না সেগুলোর টিক চিহ্ন তুলে দিয়ে OK করুন। এখন next-এ ক্লিক করুন। Successful message আসলে Finish-এ ক্লিক করুন।
4. কমান্ড অপশন যোগ করুন ডান ক্লিকে :
সাধারণত উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেমে বিভিন্ন কাজে কমান্ড অপশন ব্যবহার করা হয়। আপনি ইচ্ছা করলে মাউসের ডান ক্লিকে কমান্ড অপশন যুক্ত করতে পারেন। এ জন্য Start/Run-এ গিয়ে Notepad লিখে এন্টার করুন। নোটপ্যাড খুলবে। নোটপ্যাডে নিচের সংকেত লিখুন—
Windows Registry Editor Version 5.00
[HKEY_CLASSES_ROOT\Drive\shell\cmd]
@=”Command Prompt”
[HKEY_CLASSES_ROOT\Drive\shell\cmd\command]
@=”cmd.exe /k \”cd %L\””
[HKEY_CLASSES_ROOT\Directory\shell\cmd]
@=”Command Prompt”
[HKEY_CLASSES_ROOT\Directory\shell\cmd\command]
@=”cmd.exe /k \”cd %L\””
[HKEY_LOCAL_MACHINE\SOFTWARE\Classes\CLSID\{20D04FE0-3AEA-1069-A2D8-08002B30309D}\shell\cmd]
@=”Command Prompt”
[HKEY_LOCAL_MACHINE\SOFTWARE\Classes\CLSID\{20D04FE0-3AEA-1069-A2D8-08002B30309D}\shell\cmd\command]
@=”cmd.exe /k \”cd %L\””
এখন File/Save as থেকে command.reg নামে সেভ করুন। খেয়াল করুন, নতুন একটি রেজিস্ট্রি আইকন তৈরি হয়েছে। এই আইকনে ক্লিক করে yes/ok নির্বাচিত করুন। এখন যেকোনো ফোল্ডারে মাউস রেখে ডান ক্লিক করে দেখুন command prompt নামের নতুন একটি অপশন এসেছে।
5. ফেসবুকে অনাকাঙ্ক্ষিত ট্যাগ বন্ধ করুন :
ফেসবুকের অন্যতম জনপ্রিয় সুবিধা হলো ছবিতে ট্যাগ করা। অনেক সময় ফেসবুকে বন্ধুরা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ছবিতে ট্যাগ করে আপনাকে বিব্রত করতে পারেন। এ ছাড়া সেসব ছবি দিয়ে অন্য বন্ধুদেরও পাতা (নিউজফিড) ভরে যায়। ফলে অনেকে অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পরিচিত বন্ধুদের ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে বাদ দিতে বাধ্য হন। এ ঝামেলা এড়াতে ট্যাগ করাটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন প্রাইভেসি সেটিংসে গিয়ে।
এ জন্য প্রথমে ফেসবুকের প্রাইভেসি সেটিংস -এ যান। এরপর Timeline & Tagging পয়েন্টের এডিট সেটিংসে ক্লিক করুন। এরপর একটি নতুন বার আসবে, যাতে Review posts friends tag you in before they appear on your timeline-এর অপশনে গিয়ে Enable করে দিন। এতে আপনি অনাকাঙ্ক্ষিত ট্যাগিংয়ের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন। যদি কেউ আপনাকে কোনো ছবিতে ট্যাগ করেন, তবে ফেসবুক আপনাকে নোটিফিকেশন পাঠাবে। আপনি সেই নোটিফিকেশনে ক্লিক করে Approved করলেই সেই ছবি আপনার প্রোফাইলে আসবে এবং আপনার ফেসবুক বন্ধুরাও তাঁদের নিউজফিডে দেখতে পারবেন। যদি আপনি Approved না করেন, তাহলে সেই ছবি আপনার প্রোফাইলে দেখাবে না এবং আপনার বন্ধুদের নিউজফিডে গিয়ে বাড়তি ঝামেলা সৃষ্টি করবে না।
6. পেনড্রাইভের সর্বোচ্চ জায়গা ব্যবহার করুন :
নানা কারণে আমরা পেনড্রাইভ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পেনড্রাইভের সর্বোচ্চ সংখ্যক জায়গা ব্যবহার করা হয় না । ইচ্ছা করলে আপনার পেনড্রাইভের সর্বোচ্চ সংখ্যক জায়গা ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য প্রথমেই আপনার পেনড্রাইভের সব ফাইল কম্পিউটারে কপি করে রেখে দিন।এরপর মাই কম্পিউটারে ডানে ক্লিক করে Properties/System Properties/Hardware/Device Manager অপশনে যান। Disk drivers অপশন থেকে আপনার পেনড্রাইভটি খুঁজে বের করুন। যদি আপনি পেনড্রাইভ শনাক্ত করতে না পারেন, তাহলে প্রতিটি ড্রাইভে ডান ক্লিক করে Properties দেখুন। যে ড্রাইভের Properties উইন্ডোতে device usage বক্সে Use this device (enable) লেখা দেখাবে সেটিই আপনার পেনড্রাইভ। পেনড্রাইভ শনাক্ত করার পর ডান ক্লিক দিয়ে তার Properties-এ যান। এরপর Policies অপশনে গিয়ে Optimize for performance অপশন নির্বাচিত করুন। ফরম্যাট উইন্ডো এলে File system হিসেবে NTFS এবং Allocation unit size হিসেবে 512 bytes দিন এবং Enable compression বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে Start নির্বাচিত করুন। এরপর থেকে পেনড্রাইভে আগের তুলনায় বেশি ফাইল রাখতে পারবেন।
7. কি-বোর্ডের বিভিন্ন তথ্য জানুন মনিটর থেকেই :
এমন অনেক ল্যাপটপের কি-বোর্ড রয়েছে, যেগুলোয় ইন্ডিকেটরস নেই। এ কারণে Num-Lock, Caps Lock, Scroll Lock অপশনগুলো চালু নাকি বন্ধ, তা বোঝা যায় না। এতে কাজ করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়।
“Key-Board Leads” নামের ৫১০ কিলোবাইটের একটি ছোট সফটওয়্যার ইনস্টল করে নিলেই আপনার টাস্কবারে ইন্ডিকেট করতে থাকবে কোন বাটন লক করা, কোনটা লক করা নেই। আবার কোন বাটন লক বা আনলক করলে বিপ শব্দ করবে। সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করা যাবে এই ঠিকানা থেকে।
এই ছিল আজকে আপনাদের জন্য টিপস। আগামীতে নতুন কিছু টিপস নিয়ে হাজির হব! সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন আর ভালো রাখুন আপনার পাশের মানুষটিকে!
সবাইকে ধন্যবাদ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thanks for comment me